যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাজেট প্রস্তাবনায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে অর্থায়ন সম্পূর্ণরূপে বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। মালি, লেবানন এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষী মিশনের ব্যর্থতার উল্লেখ করে এই খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে ব্যবস্থাপনা ও বাজেট কার্যালয় ( অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট বা ওএমবি)। অভ্যন্তরীণ কিছু নথি যাচাই করে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এই খসড়া প্রস্তাবনা পাসব্যাক নামে পরিচিত। ১ অক্টোবর আসন্ন অর্থবছরের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের প্রেক্ষাপটে ওএমবি এটি তৈরি করে থাকে। নতুন প্রস্তাবনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামগ্রিক বাজেট প্রায় অর্ধেকটা হ্রাস করার পরিকল্পনা পেশ করা হয়েছে।অবশ্য বাজেট প্রস্তাব কার্যকর হওয়ার জন্য কংগ্রেসে আগে অনুমোদিত হতে হবে। আইনপ্রণেতারা চাইলে প্রস্তাবিত তহবিল কাটছাঁটের কিছু বা সম্পূর্ণটা ফিরিয়ে আনতে পারেন। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কূটনীতি ও বৈদেশিক সহায়তার বাজেটে এক-তৃতীয়াংশ কাটছাঁটের প্রস্তাব কংগ্রেস ঠেকিয়ে দিয়েছিল।
জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় অর্থদাতা যুক্তরাষ্ট্র। সংস্থাটির ৩৭০ কোটি ডলার মূল বাজেটের ২২ শতাংশ এবং শান্তিরক্ষা মিশন বাজেটে ৫৬০ কোটি ডলারের ২৭ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বাধ্যতামূলক অর্থায়নের আওতায় পড়ে। শান্তিরক্ষী তহবিলের অর্থ এখন মালি, লেবানন, কঙ্গো, দক্ষিণ সুদান, পশ্চিম সাহারা, সাইপ্রাস, কসোভো, সিরিয়া ও গোলান মালভূমির মাঝে এবং সুদান-দক্ষিণ সুদান সীমান্তবর্তী আবেই এলাকায় পরিচালিত নয়টি মিশনে ব্যবহৃত হচ্ছে।ওএমবির প্রস্তাবনার বিষয়ে মঙ্গলবার জবাব দেওয়ার কথা ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেছেন, বাজেটের জন্য এখনও চূড়ান্ত পরিকল্পনা নেই।
এদিকে, কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টেফানি ডুজারিক। তিনি বলেছেন, মার্কিন সরকারের অভ্যন্তরীণ আলোচনার ফাঁস হওয়া একটি দলিল নিয়ে মন্তব্য করতে আগ্রহী নন তিনি।যুক্তরাষ্ট্রের নিয়মিত জাতিসংঘ বাজেটের দেড়শ কোটি এবং শান্তিরক্ষী বাজেটের প্রায় ১২০ কোটি ডলার বকেয়া রয়েছে। দুবছরের বেশি কোনও দেশের অর্থায়ন ঘাটতি থাকতে সাধারণ পরিষদে তাদের ভোটাধিকার হারানোর ঝুঁকি থাকে।বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের ভয়াবহতা হ্রাসের আকাঙ্ক্ষা থেকে গড়ে তোলা জাতিসংঘ শিগগিরই তার ৮০তম বার্ষিকীতে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। গত জানুয়ারিতে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, জাতিসংঘের ব্যয় সংকোচন এবং দক্ষতা বৃদ্ধির নতুন পদ্ধতির সন্ধানে কাজ করছেন তারা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী সংঘাত-সংকটের সময় বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন কমে গেলে এসব মিশনের সক্ষমতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন